ইউক্রেনকে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে হামলা করার অনুমতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করে পশ্চিমারা আগুন নিয়ে খেলছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে পারে; যা কেবল ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে মঙ্গলবার ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়েছে মস্কো।
গত ৬ আগস্ট রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ায় সবচেয়ে বড় বিদেশি আক্রমণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে কুরস্কে ওই হামলাকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই হামলার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।
আর ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুতিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পশ্চিমারা ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং সরবরাহকৃত বিদেশি অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়ে ইউক্রেনের অনুরোধ বিবেচনা করে ‘‘সমস্যা সৃষ্টি’’ করতে চায়।
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পুতিন বারবার বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরও বিস্তৃত যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে আসছেন। যদিও তিনি বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সাথে সংঘাত চায় না রাশিয়া।
মঙ্গলবার মস্কোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ল্যাভরভ বলেছেন, আমরা এখন আবারও নিশ্চিত করছি যে, আগুন নিয়ে এই খেলা এবং তারা ছোট বাচ্চাদের মতো ম্যাচ খেলছে; যা বড় চাচা ও খালাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিশেষ করে যাদের এক বা অন্য একাধিক পশ্চিমা দেশে পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকানরা দ্ব্যর্থহীনভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কের আলোচনাকে এমন কিছু হিসাবে বিবেচনা করে যে, সৃষ্টিকর্তা এটিকে নিষিদ্ধ করেছেন। আর যদি এই যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে তা কেবল ইউরোপকেই একচেটিয়াভাবে ভোগাবে।’’
রাশিয়া তার পারমাণবিক মতবাদের বিষয়টি স্পষ্ট করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন ল্যাভরভ। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া বারবার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মস্কোর এই সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা রাশিয়ার পারমাণবিক হুমকিতে কোনও পরিবর্তন দেখতে পাননি।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমের ক্ষয়িষ্ণু পশ্চিমের সাথে শতাব্দীর পুরোনো যুদ্ধের অংশ হিসাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ন্যাটোর বিস্তার রাশিয়ার ঐতিহাসিক প্রভাব বলয় গুঁড়িয়ে দিয়ে মস্কোকে অপমানিত করেছে।
সূত্র: রয়টার্স।